ইত্যাদি এবার ঠাকুরগাঁওয়ের টংকনাথের রাজবাড়িতে
২৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:১১ এএম | আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:১১ এএম
গণমানুষের প্রিয় অনুষ্ঠান ইত্যাদির এবারের পর্ব ধারণ করা হয়েছে ঐতিহ্য ও আর্থসামাজিক সম্ভাবনার জেলা ঠাকুরগাঁওয়ে। মঞ্চ নির্মাণ করা হয়েছে প্রতœতত্ত্ব অধিদপ্তর কর্তৃক সংরক্ষিত ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার রাজা টংকনাথের রাজবাড়ির সামনে। অনুষ্ঠান ধারণ উপলক্ষে বর্ণীল আলোয় রাজবাড়ি নতুন সাজে সেজেছিল। কেউ কেউ মন্তব্য করেন, প্রায় ১০০ বছর পর রাজবাড়ি যেন তার হারানো যৌবন ও অতীত ঐতিহ্য ফিরে পেয়েছে। ইত্যাদির ধারণ উপলক্ষে পুরো ঠাকুরগাঁও জেলায় ছিল উৎসবের আমেজ। অনুষ্ঠানস্থলকে ঘিরে বসে জমজমাট মেলা। বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসে দোকানীরা, ছিল নাগরদোলাও। রাণীশংকৈলে ধারণ হলেও দর্শকরা আসেন ঠাকুরগাঁওয়ের বিভিন্ন উপজেলাসহ পাশর্^বর্তী জেলা পঞ্চগড় এবং দিনাজপুর থেকেও। বিকাল ৩টা থেকেই আমন্ত্রিত অতিথিরা অনুষ্ঠানস্থলে আসতে শুরু করেন। আমন্ত্রিত দর্শক ছাড়াও অনুষ্ঠানস্থলের বাইরে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ উপস্থিত হন সেখানে। স্থানীয়রা জানান, ইতোপূর্বে ঠাকুরগাঁওয়ে কখনও কোন অনুষ্ঠানে এত দর্শক সমাগম হয়নি। অনুষ্ঠানস্থলে ধারণক্ষমতার কয়েকগুণ লোক বেশি হওয়ার কারণে স্থানাভাবে অনেক দর্শকই আশেপাশের বিভিন্ন স্থাপনার ছাদ, রাস্তা, দেয়াল ও গাছের উপর উঠে তীব্র শীত উপেক্ষা করে দীর্ঘ সময় ধরে উপভোগ করেছেন ইত্যাদির শুটিং। উল্লেখ্য, ইত্যাদি এ বছর পা রেখেছে ৩৭তম বছরে। এবারের ইত্যাদিতে রয়েছে, ঠাকুরগাঁওয়ের সন্তান একসময়ের ঠাকুরগাঁওয়ের সাংস্কৃতিক অঙ্গণের প্রাণপুরুষ, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের একটি বিশেষ সাক্ষাৎকার। সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক এই সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে তার জীবনের অনেক অজানা কথা। এবারের অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেছেন সাঙ্গীতশিল্পী রবি চৌধুরী ও লিজা। গানটির কথা লিখেছেন লিটন অধিকারী রিন্টু। সুর ও সঙ্গীতায়োজন করেছেন কিশোর দাস। এছাড়াও অনুষ্ঠানের শুরুতেই রয়েছে ঠাকুরগাঁওকে নিয়ে মনিরুজ্জামান পলাশের কথায় একটি পরিচিতিমূলক গানের সঙ্গে নৃত্য। পরিবেশন করেছেন স্থানীয় শতাধিক নৃত্যশিল্পী। নাচটির কোরিওগ্রাফি করেছে রোহিত খান তুহিন, কণ্ঠ দিয়েছেন তানজিনা রুমা, রাজীব, অয়ন চাকলাদার ও সানজিদা রিমি। গানটির সুর করেছেন হানিফ সংকেত এবং সঙ্গীত আয়োজন করেছেন মেহেদী। দর্শক পর্বের নিয়ম অনুযায়ী, ধারণস্থান ঠাকুরগাঁওকে ঘিরে করা প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে উপস্থিত দর্শকের মাঝ থেকে ৩ জন দর্শক নির্বাচন করা হয়। ২য় পর্বে নির্বাচিত দর্শকরা সাম্প্রতিক কিছু বিষয় নিয়ে রচিত একটি নাট্যাংশে অভিনয় করেন। শেকড় সন্ধানী ইত্যাদি সবসময়ই দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে প্রচার বিমুখ, জনকল্যাণে নিবেদিত মানুষদের তুলে ধরার পাশাপাশি প্রত্যন্ত অঞ্চলের অচেনা-অজানা বিষয় ও তথ্যভিত্তিক শিক্ষামূলক প্রতিবেদন প্রচার করে আসছে। সেই ধারাবাহিকতায় এবারের পর্বেও রয়েছে কয়েকটি হৃদয় ছোঁয়া প্রতিবেদন। রয়েছে ঠাকুরগাঁওয়ের উপর একটি তথ্যভিত্তিক প্রতিবেদন। ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে অবস্থিত এশিয়া মহাদেশের সবচেয়ে বড় আমগাছ, ঠাকুরগাঁওয়ের পনির বা চিজ উৎপাদন, লোকায়ন জীবন বৈচিত্র্য জাদুঘর এবং ধারনস্থান রাজা টংকনাথের রাজবাড়ির উপর রয়েছে একটি প্রতিবেদন। দেশের অন্যতম দার্জিলিং জাতের কমলার বাগান ঠাকুরগাঁওয়ের অরেঞ্জ ভ্যালির উপর রয়েছে একটি প্রতিবেদন। যেখানে কমলার পাশাপাশি হলুদ রংয়ের মিষ্টি মাল্টার চাষও করা হয়। গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের ক’জন প্রবীণ মিলে গড়ে তুলেছেন একটি ব্যতিক্রমধর্মী সংগঠন। এই সংগঠনের উপর রয়েছে একটি অনুকরণীয় প্রতিবেদন। ২০১৮ সালে যখন সুনামগঞ্জের টেকেরঘাটে ইত্যাদি ধারণ করা হয়, তখন এখানে মোটর সাইকেল ছাড়া তেমন কোন বাহনই ছিলো না এবং ইত্যাদির আগে কোন টেলিভিশন ক্যামেরাও সেখানে যায়নি। ইত্যাদি ধারণের পর টেকেরঘাটের বর্তমান অবস্থা নিয়ে এবারের পর্বে রয়েছে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন। রয়েছে সাগরের বুকে ভাসমান দোকানের উপর একটি তথ্যভিত্তিক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন। এছাড়া কক্সবাজার জেলার টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের পল্লী চিকিৎসক ঝন্টু বড়–য়ার উপর রয়েছে একটি মানবিক প্রতিবেদন। তিনি এ পর্যন্ত ৪১ জন মানসিক রোগীকে সুস্থ করে তাদের দেয়া ঠিকানা অনুযায়ী পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছেন। বিদেশি প্রতিবেদন পর্বে রয়েছে গণচীনের রাজধানী বেইজিং এ অবস্থিত বিশ্বের বৃহত্তম পাবলিক স্পট বা জনসমাগম স্থল ঐতিহাসিক তিয়েনআনমেন স্কয়ারের উপর একটি তথ্যসমৃদ্ধ প্রতিবেদন। ঠাকুরগাঁওয়ের মঞ্চে এবার নাতিকে দেখা গেলেও দেখা যায়নি নানিকে। সাথীহারা নাতি কি করেছে তা দেখতে হলে অপেক্ষা করতে হবে অনুষ্ঠান প্রচারের দিন পর্যন্ত। এছাড়া ইত্যাদির নিয়মিত পর্ব চিঠিপত্র পর্ব ছাড়াও সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় ও প্রসঙ্গ নিয়ে সামাজিক অসঙ্গতি ও সমাজ সংস্কারের উপর রয়েছে বেশ কিছু তীক্ষè ও তীর্যক নাট্যাংশ। জ্যোতিষের অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ, একালের বিবাহবার্ষিকীতে সেকালের উপহার, সময়ের বিবর্তনে ঘরোয়া ভাষার পরিবর্তন, সবজি বাজারে ঘোরগ্রস্থ ক্রেতা, চিৎকার সর্বস্ব উপস্থাপকের সাক্ষাৎকার, পারিবারিক শিক্ষা বনাম পারিপাশির্^ক শিক্ষা, ইউটিউবের নেশায় বিপর্যন্ত পারিবারিক পরিবেশ, নিজের বেলায় ষোল আনা, দিন যায় কথা থাকে, চাপা আতঙ্কসহ বেশ কয়েকটি নাট্যাংশ। বরাবরের মত এবারও ইত্যাদির শিল্প নির্দেশনা ও মঞ্চ পরিকল্পনায় ছিলেন ইত্যাদির নিয়মিত শিল্প নির্দেশক মুকিমুল আনোয়ার মুকিম। পরিচালকের সহকারী হিসাবে ছিলেন যথারীতি রানা সরকার ও মোহাম্মদ মামুন। ইত্যাদির এই পর্বটি আগামী ৩১ জানুয়ারি, শুক্রবার রাত ৮টার বাংলা সংবাদের পর প্রচার হবে বাংলাদেশ টেলিভিশনে। ইত্যাদি রচনা, পরিচালনা ও উপস্থাপনা করেছেন হানিফ সংকেত। নির্মাণ করেছে ফাগুন অডিও ভিশন। ইত্যাদি স্পন্সর করেছে কেয়া কসমেটিকস লিমিটেড।
বিভাগ : বিনোদন
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
ভিআইপি মর্যাদায় সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রীর রিমান্ড শুনানি!
খুনিদের গ্রেফতারে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ
পেশাব করে টিস্যু ব্যবহারের অনেকক্ষন পরেও পেশাবের রাস্তা ভেজা থাকলে করণীয় প্রসঙ্গে।
সৈয়দপুরে বর্ধিত শুল্ক প্রত্যাহারের দাবিতে ফল ব্যবসায়ীদের মানববন্দন
সিলেটে ওবায়দুল কাদেরসহ ৭২ জনের বিরুদ্ধে মামলা
যাত্রাবাড়ীতে বাকপ্রতিবন্ধীসহ আপন দুই বোনকে ধর্ষণ, আটক ১
তিন বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ করবে ইসি
আশুলিয়ায় ৬টি ইটভাটাকে ৩৬ লাখ টাকা অর্থদন্ড
গ্রামে আধুনিক চিকিৎসা সুবিধা সম্প্রসারণ জরুরি
অর্থনৈতিক কৌশল পুনর্নির্ধারণে টাস্কফোর্সের প্রতিবেদন হস্তান্তর
বিস্কুটের উপর ভ্যাট বৃদ্ধি কেন?
বিএনপি বনাম নতুন রাজনৈতিক দল
সন্ত্রাসী হামলায় ধলাপাড়া রেঞ্জের বিট কর্মকর্তা ও বন প্রহরীসহ মারাত্মকভাবে আহত ৯
জামালপুরে ট্রাকচাপায় অটোরিকশার ৫ যাত্রীর মৃত্যু
পিলখানা হত্যাকাণ্ডের বিচার নিয়ে বিভ্রান্তি কাম্য নয়
জামায়াতে ইসলামী মানবিক ও দূর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে চায়: ডা. শফিকুর রহমান
‘রক্ত দিয়ে ছাত্ররা যা অর্জন করেছে, তা তাদেরই রক্ষা করতে হবে’
পালিয়ে যাওয়া হাসিনা দেশের মাটিতে আসতে পারবে না : খায়ের ভূঁইয়া
সামরিক শক্তিতে মিয়ানমার-ইরাকের চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ
সরব হওয়ার দিন